শিশুদের দুধদাঁত ছয় মাস বয়স থেকে মুখে গজাতে শুরু করলেও এর মূল ভিত্তি তৈরি হয় মাতৃগর্ভে থাকার সময়ে, যখন মা ছয় থেকে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকেন। তাই শিশুর দাঁতের সুস্থতার প্রস্তুতির শুরুটা মায়ের গর্ভ থেকেই। এ সময় মাকে প্রচুর শাকসবজি, ফলমূল ও ছোট মাছের সঙ্গে ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

অনেক সময় শিশু দুধদাঁত নিয়েই জন্মগ্রহণ করে, কিন্তু এগুলো আসলে দুধদাঁত না-ও হতে পারে। এ দাঁতের জন্য অনেক সময় শিশুদের বুকের দুধ খেতে কষ্ট হয় এবং দাঁতের ঘর্ষণে মুখে ঘা হয়। তাই এই অস্বাভাবিক দুধদাঁত ফেলে দেওয়াও প্রয়োজন হতে পারে। দুধদাঁত ওঠার সময় শিশুদের কিছু সমস্যা হতে পারে। আসুন, এ সম্পর্কে জেনে নিই।

-শিশুর দুধদাঁত ওঠার সময় মাড়িতে ব্যথা বা জ্বর হতে পারে। এতে ভয়ের কিছু নেই। জ্বর ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধ দেওয়া যায়। হালকা গরম লবণ-পানিতে তুলা ভিজিয়ে মুখের ভেতরের মাড়ি পরিষ্কার করে দেওয়া উচিত।

-দাঁত ওঠার সময় শিশুরা এটা-ওটা কামড়াতে চায় বলে অনেক মা শিশুর মুখে চুষনি দিয়ে রাখেন। এ ধরনের চুষনি বা খেলনা মুখে দেওয়া বিজ্ঞানসম্মত নয়। এতে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তার ওপর শিশুর একটি বদভ্যাস গড়ে ওঠে, যা পরে ছাড়তে চায় না।

-দাঁত ওঠার সময় মুখ শিরশির করে বলে শিশুরা হাত বা যেকোনো কিছু পেলেই মুখে দেয়। তাই জীবাণুর সংক্রমণ এড়াতে শিশুর হাত ও খেলনা সব সময় বিশুদ্ধ পানিতে পরিষ্কার করে রাখুন।

-দুধদাঁত উঠতে দেরি হলে (ছয়-সাত মাসের বেশি) উদ্বিগ্ন না হয়ে বিশেষজ্ঞ ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শমতো একটি এক্স-রে করিয়ে দেখে নেওয়া ভালো। তাতে বোঝা যাবে দুধদাঁত বের হতে কত দিন বাকি আছে অথবা অনুপস্থিত কি না।

-মনে রাখা প্রয়োজন, শিশুর দুধদাঁত বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক সময়ের আগেই পড়ে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে পারে। সে জন্য নিয়মিত শিশুর মুখের ভেতরের দিকটা খেয়াল রাখতে হবে। যদি কোনো অস্বাভাবিক কিছু লক্ষ করেন, যেমন দুধদাঁতের পেছনে স্থায়ী দাঁত উঠে যাওয়া, দুধদাঁত নড়ে গিয়ে রক্ত পড়া এবং হেলে গিয়ে ব্যথা হওয়া অথবা নির্ধারিত সময়ের পরেও দুধদাঁত পড়ে গিয়ে স্থায়ী দাঁত না ওঠা ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা ভালো।